ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? | ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? | ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? | ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা - কারিগরি বা জীবনমুখী শিক্ষা, আমরা প্রায় সকলেই এই শিক্ষাটি সম্পর্কে শুনেছি বা জেনেছি। যেখানে মূলত তাত্ত্বিক পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক ক্লাসের মাধ্যমে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ পড়াশোনা একাডেমিক হলেও উজ্জ্বল এবং ব্যতিক্রম হচ্ছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে। 

আমাদের এ আই বিডি-২৪ ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম।


এখানে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে শেখানো জন্য ব্যবহারিক ক্লাস করানো হয়। থ্রি ইডিয়টস মুভি এর একটি ডায়লগ, আমির খান একটা কথা বলে, যে সকল জিনিস আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তুলে সেগুলোই মেশিন। 


ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে, নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে জীবন সহজ করা, এটি মূলত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বলা হয়।

বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র একাডেমিক পড়াশোনা করানো হয়। 


অপরদিকে ডিপ্লোমা পড়াশোনার ক্ষেত্রে সিলেবাসে একাডেমিক ও ব্যবহারিক দুটোই সমানভাবে গুরুত্ব পায়। নানান বিষয়ে ডিপ্লোমা করার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশ।

মজার ব্যাপার হচ্ছে বিদেশের মত বাংলাদেশেও বর্তমানে হাতে-কলমে পড়াশোনা ও কাজের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

পৃথিবীর যে সকল দেশ কারি কারি শিক্ষার প্রতি বেশি গুরুত্বারপ করছেম, সে সকল দেশ তত বেশি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি লাভ করছে। বর্তমানে চীন কিংবা জাপানের দিকে তাকালেই এই কথা আমরা সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারি।


আর শুধুমাত্র ডিপ্লোমাধারীদের ক্ষেত্রেই না, সাধারণ অনার্স, মাস্টার্স করলেও ফ্রেশারদের চাকরি পাওয়া ক্ষেত্রে পার্ট টাইম কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। 

আর সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি যখন প্রজেক্ট এসাইনমেন্টসহ বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থাকে, তখন চাকরি পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। 

চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি বা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কাকে বলে।


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি ?

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? | ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং হল চার বছর মেয়াদী একটি কোর্স যেখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গণিত এই সকল বিষয়ের উপর বিশদ পাঠদান করানো হয়।

সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিকেল গুলোতে চার বছর মেয়াদি যে ইঞ্জিনিয়ারিং কারিকুলাম রয়েছে তাকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বলে।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সাধারণত যারা এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, বা হয়েছে সেসব শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার আবেদন করতে পারেন।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়বেন ?


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং বেশ কিছু কারণে পড়া উচিত বলে অনেকেই ধারণা করেন। যেমন: দ্রুত চাকরি পাওয়ার নিশ্চয়তা।  ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে সরাসরি দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করা যায়।

হাতে কলমে শিক্ষা দেওয়া হয় বলে নিজে দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরেও এই ডিগ্রীর বেশ গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। 

তাই দেশে পড়ালেখা শেষ করে আপনি সহজেই বিদেশের কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে পারবেন। অন্যতম প্রধান উপকারী।

সেশনজট মুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা। অন্যান্য উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সময়ে সেশন জটের কারণে মূল্যবান সময়ের অপচয় হলেও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে তা একেবারেই নেই।


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানোর বিষয়সমূহ


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হল:

  • সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং
  • কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং
  • অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং
  • ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

উল্লেখিত বিষয়গুলো ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়ানো হয় এ বিষয়গুলোর সাথে আমরা সবাই পরিচিত।

তবে বর্তমান সময়ের পাল্লা দিয়ে পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট গুলোতে নানা বৈচিত্র্যময় বিষয় যোগ হচ্ছে। 
যেমন: 

  • ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং
  • প্রিন্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং
  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • গেলাস ইঞ্জিনিয়ারিং
  • সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং
  • ইলেক্ট্রো মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং
  • শিপ বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং
  • সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং
  • কনস্ট্রাকশন
  • টেলিকমিউনিকেশন
  • রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশনিং ইঞ্জিনিয়ারিং
  • সার্ভেয়িং আর্কিটেকচার 
  • কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি
  • এনভাসমেন্টাল সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং
  • আরকিটেকচার এন্ড ইনটে রিওর ডিজাইন
  • গার্মেন্টস ডিজাইন এন্ড প্যাটার্ন মেকিং
  • ইন্সট্রুমেন্টেশন এন্ড প্রসেস কন্ট্রোল
  • ডেটা টেলিকমিউনিকেশন এন্ড নেটওয়ার্কিং
  • এয়ার ক্র্যাফট মেনটেনেন্স ইঞ্জিনিয়ারিং

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা


এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যে কোন শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

এক্ষেত্রে বয়স এবং কোন সালে পাশ করেছেন এরকম কোন সীমারেখা বা ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।

আরেকটি অভাবনীয় সুযোগ আছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ক্ষেত্রে।

সাধারণত আমরা সকলেই জানি, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য বিজ্ঞান বিভাগ বা সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড এর হতে হয়। 

তবে এখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং। যেকোনো বিভাগ থেকে পাশ করেই যে কেউ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়েভর্তি হতে পারবেন।

২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন এই আইন অনুযায়ী ভর্তি করা শুরু হয়েছে। কারিগরি শিক্ষায় দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে ধরা হয়।

ভর্তি প্রতিক্রিয়া য় অন্যান্য উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মত পলিটেকনিকেল ইন্সটিটিউট গুলোতে কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।

শিক্ষক, কর্মচারীদের জন্য ২% আসন সংরক্ষিত থাকে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা নাতি নাতনিদের জন্য ৫% এবং এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য ১৫% আসন বরাদ্দ থাকে।



ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এ আবেদনের নিয়ম


ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি সংক্রান্ত নোটিশ পলিটেকনিক শিক্ষা বোর্ড এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়।

একজন শিক্ষার্থী একসাথে 15 টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে অনলাইনের আবেদনের পড়বে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

আবেদন ফি জমা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস যেমন বিকাশ রকেট শিওর ক্যাশের মাধ্যমে আবেদন ফি ২৩৮ টাকা জমা দিতে পারবেন।

আবেদনের ক্ষেত্রে কোন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় না। এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ভর্তি হতে পারেন শিক্ষার্থীরা। আবেদন ফরমে উল্লিখিত পছন্দের বিষয়ের ভিত্তিতে মেধা এবং কোটা অনুসরণ করে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়।

ভর্তির সময় এসএসসি বা সম্মানের পরীক্ষায় মূল নম্বর পত্র বা ট্রান্সস্ক্রিপ্ট সংশ্লিষ্ট পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে জমা দিতে হয়।


Post a Comment

Post a Comment (0)

Previous Post Next Post