ওজন কমাতে কতক্ষণ ব্যায়াম করা উচিত - অতিরিক্ত ওজন একজন মানুষকে যেভাবে অসুস্থ করে দেয়, ঠিক তেমনি ভাবে দেখতেও অনেকটা বিশ্রী দেখায়, অনেকে আছেন যারা ওজন কমানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করেও নিজেদের ওজন কমাতে পারছেন না। অনেকেরই আবার নির্দিষ্ট কোন চাকরির জন্য ওজন কমানো দরকার পড়ে, কিছু চাকরিতে পদোন্নতির জন্য কর্মীর ওজন জরুরী বিষয় হিসেবে দেখা হয়। অনেক সময় বিশেষ অস্ত্র পাচারের আগে জরুরি ভিত্তিতে রোগীর ওজন কমানো দরকার পড়ে।
এর আর্টিকেলে আমরা ওজন কমাতে কতক্ষণ ব্যায়াম করা উচিত এই বিষয়টি নিয়ে একটি বিস্তারিত আলোচনা তৈরি করেছি, যেটি আপনার দৈনন্দিন জীবনে অনেক একটি বড় পরিবর্তন এনে দেবে, মনোযোগ দিয়ে নিজের সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ুন।
ওজন কমাতে কতক্ষণ ব্যায়াম করা উচিত
নিজেকে পুরোপুরি সুস্থ রেখে সাধারণত মাসে ৪-৫ কেজি ওজন কমানো যায়, তবে কারো যদি জরুরী কারণে এক মাসের ৭ কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজন কমানোর দরকার পরে, তবে অবশ্যই পরিকল্পনা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওজন কমাতে হবে। এক মাসের ৭ কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজন কমানোর জন্য কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়ে, এই পদক্ষেপের মধ্যে শুধু খাবার নিয়ন্ত্রণ নির্ণয় নয় পুরো জীবন যাপনকেই একটা অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে, তাহলে কম সময়ে কাঙ্খিত সাফল্য মিলবে।
আরো পড়ুন: সকালে কোন ধরনের ব্যায়াম করা উচিত?
ওজন কমানোর কার্যকর উপায়
- খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন।
- সুষম খাবার খাওয়া।
- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার।
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম।
- শারীরিক ব্যায়াম।
- রাতে দ্রুত খাবার খাওয়া।
- খাবারের আগে পানি পান।
- অতিরিক্ত খাবার পরিহার।
- পানি পান।
- চিনি পরিহার করুন।
- গ্রিন টি।
- রঙ্গিন সালাদ।
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো এবার আমরা বিস্তারিত জেনে নিব, চলুন এক এক করে উল্লেখিত বিষয়গুলোর বিস্তারিত বিবরণ জেনে নেয়া যাক।
আরো পড়ুন: সপ্তাহে কতদিন ব্যায়াম করা উচিত
খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন
মাসে ৭ কেজি ওজন কমাতে হলে প্রথমে আপনাকে খাদ্য অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনার খাদ্য অভ্যাস যেন নিয়ম মেনে প্রতিদিন একই সময় হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। সকালবেলা ভারী নাস্তা দুপুরে ভাত আর রাতে রুটি বা হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। মাঝখানে সময়ে ফলমূল খেতে পারেন, এই খাদ্য অভ্যাস আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
সুষম খাবার গ্রহণ
ওজন কমানোর জন্য অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে আপনাকে অবশ্যই সুষম খাবার খেতে হবে। বেশি পরিমাণে ফলমূল শাকসবজি ইত্যাদি খাওয়ার চেষ্টা করুন। চর্বি বা চর্বি জাতীয় খাবার পুরোপুরি বাদ দিতে হবে। বাহিরের তেলে ভাজা খাবার খাদ্য তালিকা থেকে একদমই বাদ দিতে হবে। ফাস্টফুড যথাসম্ভব খাওয়া চেষ্টা করুন। দুই বেলার মধ্যবর্তী সময়ে খিদে পেলে পপকন ফল বা ফলের জুস খেতে পারেন।
আরো পড়ুন: ব্যায়াম করার উপকারিতা ও অপকারিতা
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করুন
জেনে অবাক হতে পারেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে মানুষ বেশি খায়, ফলে মোটা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, তাই নিজেকে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সম্পন্নভাবে পরিহার করুন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
দিনে কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন তবে। এর বেশি ঘুমালে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করতে হবে। মনে রাখবেন অতিরিক্ত ঘুম আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। নিয়ম মেনে রাতে জলদি ঘুমাতে যান, ও ভোরবেলা উঠে পড়ুন এবং ব্যায়াম করতে লেগে যান।
শারীরিক ব্যায়াম
দ্রুত ওজন কমানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি উপায় হচ্ছে শারীরিক ব্যায়াম করা। ব্যায়াম আমাদের শরীরকে যেমন ফিট রাখে, তেমনি ভাবে আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই এক মাসের ৭ কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে চাইলে, আপনাকে প্রতিদিন কম করে হলেও দেড় ঘন্টা দুই ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে।
আরো পড়ুন: সবচেয়ে উপকারী ব্যায়াম
এ সময় টুকুর জন্য আপনি হাঁটতে পারেন। দৌড়াতে পারেন, ওজন কমানোর জন্য সাতরানো ও সাইকেল চালানো আদর্শ ব্যায়াম হতে পারে। ব্যায়াম করার জন্য আপনাকে ঘরের বাইরে জিমনেসিয়ামে বা পার্কেই যেতে হবে. এমন কোন প্রয়োজন নেই। আপনি ঘরের দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই নিজের ব্যায়াম সেরে নিতে পারবেন।
রাতে দ্রুত খাওয়ার চেষ্টা করুন
ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে 1 থেকে দেড় ঘন্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চেষ্টা করুন রাত আটটার মধ্যে খাবার খেয়ে নিতে, কারণ রাতে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়লে তাহলে আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে। রাতে ঘুমানোর আগে খিদে লাগলে ফল অথবা দুধ খেতে পারেন।
খাওয়ার আগে পানি পান করুন
খাবার গ্রহণের ১০ থেকে ১৫ মিনিট আগে পানি পান করুন। আপনার হজমে সাহায্য হবে। যথা সম্ভব বাড়িতে তৈরি খাবার খান জাঙ্ক ফুড পুরোপুরি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
অতিরিক্ত খাবার পরিহার করুন
আপনার জন্য যেটুকু খাবার প্রয়োজন ঠিক ওই পরিমাণে খাবার খান। নিজের শরীরের চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খেলে আপনার ওজন অতিরিক্ত বাড়বেই, তাই এক মাসে টার্গেট পরিমাণ ওজন কমাতে অবশ্যই আপনাকে অতিরিক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
পানি পান করুন
পরিমাণ মতো এক ঘন্টা অন্তর অন্তর পানি পান করুন। আমি আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া পানি আপনার ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পানি রাখুন এবং নিয়মে তা পান করুন।
চিনি পরিহার করুন
কাঙ্খিত ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা থেকে চিনি পুরোপুরি পরিহার করা অবশ্য কারণ মাত্র এক চা চামচ চিনিতে 16 শতাংশ ক্যালরি থাকে যা আপনার ওজন কমানোর জন্য সম্পূর্ণ বাধা প্রদান করে তাই চা ও দুধে চিনি পরিহার করুন।
গ্রিন টি পান করুন
গ্রিন টি তে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান, যা আমাদের ওজন কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটি গবেষণা দেখা গেছে প্রতিদিন চার কাপ করে গ্রিন টি এক সপ্তাহে খেলে শরীরের ৪০০ গ্রাম ক্যালরি ক্ষয় করা সম্ভব। এটাই আমাদের দেহের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে ফলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় গ্রিন টি অবশ্যই রাখতে পারেন। আপনার অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য।
রঙ্গিন সালাত
খাদ্য তালিকায় রাখুন বিভিন্ন রঙের সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি করা সালাত এ সালাদের সঙ্গে টক দই মেশাতে পারেন। এতে ওজন কমবে এবং শরীরের সুস্থতা বজায় থাকবে। যেমন ধরুন শসা গাজর ইত্যাদি খেতে পারেন সালাত হিসেবে।
কখন ব্যায়াম করলে ভালো হয়?
অনেকেই সন্ধ্যা বা রাতে ব্যায়াম করেন অনেকে আবার সকালের সময়টি শ্রেষ্ঠ ভাবেন ব্যায়ামের সঠিক সময় কোনটি এ নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই আবার দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে, আসলে ব্যায়াম করার কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। যখন আপনি সময় পাবেন, তখনই ব্যায়াম করতে পারবেন, তবে অবশ্যই প্রত্যেকদিন একই টাইমে ব্যায়াম করতে হবে।
সকালে ব্যায়াম করতে চাইলে কার্ডিওব্যামগুলো বেশি উপকারী যেমন; হাঁটাচলা বা দৌড়ানো সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো তবে সকালে একেবারে খালি পেটে ব্যায়াম না করাই ভালো আর বিকেলে ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ওয়েট ট্রেনিং বেঙ্গল করতে পারেন।
সর্বশেষ:
ওজন কমাতে কতক্ষণ ব্যায়াম করা উচিত - ওজন কমানোর জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য করার কথায় নিয়ম মেনে প্রতিদিন পরিশ্রম করুন এবং ব্যায়াম করুন এতে আপনার শরীর গঠন সুন্দর থাকবে এবং রোগ প্রতিরোধ থাকবে যা আপনার দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
খাবার পরে কি ব্যায়াম করা উচিত,ওজন কমানোর উপায়,কত সময় ব্যায়াম করা উচিত,রাতে কি ব্যায়াম করা ঠিক,ওজন কমাতে কখন ব্যায়াম করবেন,ওজন কমানোর ব্যায়াম,ওজন কমাতে কোন কোন ব্যায়াম করব,ওজন কমানোর সহজ উপায়,ব্যায়াম ছাড়া ওজন কমানো,কতক্ষন ব্যায়াম করলে ওজন কমবে,কতটা ওজন কমাতে কতক্ষন হাঁটা প্রয়োজন,ওজন কমাতে সহজ ঘরোয়া ব্যায়াম।
Post a Comment